স্বদেশ ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের সখীপুর-সাঘরদিঘী সড়কের কচুয়া বাজারের অংশে মারাত্মক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত ডজনখানেক গাড়ি ওই খানাখন্দে ফেঁসে যাচ্ছে। এতে ওই রাস্তায় চলাচল করা প্রায় সব গাড়িকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। চরম এই ভোগান্তি বেশ কয়েকদিন যাবত চললেও দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই এই রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। নিম্নমানের সংস্কারের ফলে বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় রাস্তার এই অংশ এমনই থাকে।
পাশেই রয়েছে কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়। ভোগান্তিতে পড়ছে ওই বিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও। চলাচলের পাশাপাশি জ্যামে পড়ে থাকা গাড়ির অব্যাহত হর্ণে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ক্লাসও করতে পারছে না।
ময়মনসিং, মুক্তাগাছা, ঘাটাইল, ফুলবাড়িয়া, সাগরদীঘি, কুতুবপুর, বড়চওনাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বাস-ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ইজিবাইক, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ প্রতিদিন ছোট-বড় অন্তত কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে এই রাস্তা দিয়ে। কয়েক জেলার সংযোগ সড়ক এটি। ঘাটাইল এবং সখীপুর উত্তরের মানুষের শহরাঞ্চল ও ঢাকায় যাওয়ার রাস্তাও এটি। দেশের সবচেয়ে বড় কলার হাট কুতুবপুরের কলা ভর্তি ট্রাকগুলো টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায় এই রাস্তা দিয়েই যায়। এছাড়া ডিম, মুরগির বাচ্চা, গরু ও মুরগির ফিড, আনারস, আখ, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য এই রাস্তা দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তাটির সংস্কার না হওয়ায় পথচারীদের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নির্ধারিত সময়ে শহরাঞ্চলে নিতে পারছেন না। এতে তারা মারাত্মক লোকসানে পড়ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মালবোঝাই একটি ট্রাক ওই রাস্তায় ফেঁসে যাওয়ায় অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়েছে। এতে যাত্রীরা মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন।
ওই রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াতকারী ইজিবাইক চালক আবদুল আজিজ বলেন, প্রতিদিন এই জায়গায় কয়েকটি ইজিবাইক উল্টে যায়, ট্রাক ফেঁসে যায়। কোনো গাড়ি ফেঁসে গেলে দীর্ঘ সময় গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ কারণে আগে দিনে ১ হাজার টাকা উপার্জন করলে রাস্তা খারাপ হওয়ার পরে ৫০০ টাকা নিয়েই বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে। গাড়ির অবস্থাও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
ট্রাকচালক বাবুল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কতদিন হয়ে গেল খারাপ হয়ে আছে, তবুও দায়িত্বশীলরা সংস্কার করছে না। প্রতিদিন এই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে, গাড়ি উল্টে যাচ্ছে, তবুও তারা ঠিক করে না। ভোটের সময় হলে তো ঠিকই হাতেপায়ে ধরবে ভোটের জন্য।
গাড়িচালক, পথচারী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় মানুষেরা দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের মির্জাপুর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: আনোয়ার হোসেন খান বলেন, সখীপুর-সাঘরদিঘি সড়কের কচুয়া বাজারের অংশে আমরা অনেকবার কাজ করেছি, ইট বিছিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বৃষ্টি হলে সড়কের ওই অংশ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ, কচুয়া একটি বড় বাজার, তাছাড়া বৃষ্টির পানি বের হওয়ার মত কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে সড়ক তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি জানান, সখীপুর-সাগরদিঘি সড়ক সংস্কারের জন্য আমরা আবেদন করেছি। আশা করি আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে আমরা কাজ শুরু করতে পারব। এখন আর ইট দিয়ে নয়, কচুয়া বাজারের অংশে ঢালাই করে দেয়া হবে।